ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২
মুক্ত মনমুক্ত চিন্তামুক্তি গাথা

বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় তাহমিনার পরিবার

নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১২ মে ২০২৫, ০৪:২৯ পিএম
তাহমিনা আক্তার
তাহমিনা আক্তার

নদীভাঙন ও চরম দারিদ্র্যের মাঝেও হার মানেনি তাহমিনা আক্তারের স্বপ্ন। নোয়াখালীর উপকূলীয় ও দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার প্রত্যন্ত জোডখালী গ্রামের এক হতদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসে সে এবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছে। কিন্তু এই সাফল্যের মধ্যেই এক নতুন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তাহমিনার মা-বাবা। ভর্তি ও ঢাকায় লেখাপড়ার খরচ কীভাবে জোগাবেন, সেই প্রশ্ন এখন তাদের কাছে বড় এক বোঝা।

তাহমিনার বাড়ি হাতিয়ার হরণী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের জোডখালী গ্রামে। বাবা কামাল উদ্দিন একজন দিনমজুর, স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন কাজ করে কোনো রকমে সংসার চালান। মা রাবেয়া খাতুন গৃহিণী। সংসারে রয়েছে আরও চার ভাইবোন।

জানা যায়, দরিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করেই বেড়া উঠা তাহমিনা আক্তারের। হাতিয়া জনকল্যাণ শিক্ষা ট্রাস্ট হাইস্কুল থেকে ৪.৮৩ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি ও মোহাম্মদ আলী কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে এইচএসসি পাশ করেছেন। অন্যদের পুরাতন বই সংগ্রহ করে শেষ করেছেন পড়ালেখা। কোচিংয়ের সামর্থ্য না থাকলেও প্রবল আত্মবিশ্বাস, অধ্যবসায়ে নিজেকে প্রস্তুত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। কোনো কোচিং ছাড়াই তাহমিনা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে। তবে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তার পরিবার ভর্তি ও পড়াশোনার খরচ নিয়ে পড়েছেন দুশ্চিন্তায়।

তাহমিনা আক্তার বলেন, পুরাতন বই সংগ্রহ করে আমি পড়াশোনা করেছি। টাকার অভাবে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারিনি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার পাশাপাশি গুচ্ছে এখনো রেজাল্ট দেয়নি। আমি জানি না ঢাকায় গিয়ে কিভাবে পড়াশোনা করব, তা এখনো ভাবতে পারছি না। কিন্তু আমি হাল ছাড়তে চাই না। জীবনে বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখি।

তাহমিনার মা রাবেয়া খাতুন বলেন, মেয়ে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে। সে অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করেছে। কিন্তু এখন তো ভর্তি আর পড়াশোনার খরচ জোগানোই বড় চিন্তা।

স্থানীয় অনেকেই তাহমিনার সাফল্যে আনন্দিত অন্যদিকে আনন্দিত তাহমিনার শিক্ষকরাও। মোহাম্মদ আলী কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আজমির হোসেন বলেন, তাহমিনা আমাদের কলেজের গর্ব। সে শুধু মেধাবীই নয়, অত্যন্ত বিনয়ী ও পরিশ্রমী একজন শিক্ষার্থী। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া আমাদের জন্য গর্বের হলেও, তার পরিবারের জন্য তা এখন এক নতুন দুশ্চিন্তার নাম। যদি উপযুক্ত সহায়তা পায় এবং পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, তাহমিনা ভবিষ্যতে দেশ ও সমাজের জন্য এক মূল্যবান সম্পদে পরিণত হবে।

অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পাথরাইল-নলশোদা গণহত্যা (দেলদুয়ার, টাঙ্গাইল)

৩০ জুলাই ১৯৭১: মুক্তিবাহিনীর সফল গেরিলা অভিযান

গঙ্গাচড়ার সহিংসতা / রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব ও সমাজের নীরবতা

২৯ জুলাই ১৯৭১: মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধ কার্যক্রম তীব্রতর

সংবিধানের সঙ

২৭ জুলাই ১৯৭১: বিভিন্ন অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর সাহসী আক্রমণ

২৬ জুলাই ১৯৭১: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন

রাধুটিলা গণহত্যা (বিয়ানীবাজার, সিলেট)

২৪ জুলাই ১৯৭১: ভেনিজুয়েলা ও সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের গণহত্যার প্রতিবাদ

পাতারচর গণহত্যা (মুলাদী, বরিশাল)

১০

মানুষই মানুষের অন্তিম আশ্রয়

১১

২৩ জুলাই ১৯৭১: বিশ্ব শক্তি বাংলাদেশ সংকট নিয়ে সক্রিয়ভাবে জড়িত

১২

২২ জুলাই ১৯৭১: টাঙ্গাইলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উপর আক্রমণ

১৩

ভাড়ায় চাপাতি ও মোটরসাইকেল: রাজধানীর অপরাধ জগতের ভয়াবহ নতুন রূপ

১৪

রাজনীতির উনমানুষরাই প্রলাপ ডাকে বেশি

১৫

২১ জুলাই ১৯৭১: ঠাকুরগাঁওয়ে গেরিলা অভিযান মুক্তিযোদ্ধাদের

১৬

মবতন্ত্রের জয়

১৭

ডিজিটাল দাসত্ব: মনোযোগ অর্থনীতি ও জ্ঞান পুঁজিবাদে তরুণ প্রজন্মের মননশীলতার অবক্ষয়

১৮

২০ জুলাই, ১৯৭১: বাংলাদেশে কুচক্রী আগ্রাসন

১৯

২০ জুলাই ১৯৭১: বিলমাড়িয়া হাটে গণহত্যা পাকিস্তানি সেনাদের

২০