ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২
মুক্ত মনমুক্ত চিন্তামুক্তি গাথা

২৯ জুলাই ১৯৭১: মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধ কার্যক্রম তীব্রতর

প্রিয়ভূমি প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ১০:২৩ এএম
২৯ জুলাই ১৯৭১: মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধ কার্যক্রম তীব্রতর

১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ছিল স্বাধীনতার জন্য একটি ঐতিহাসিক সংগ্রাম, যা অসংখ্য ঘটনা ও মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে চিহ্নিত হয়েছিল। ২৯ জুলাই ১৯৭১ ছিল এমন একটি দিন, যখন বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি ঘটেছিল, যা এই যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি ও তীব্রতাকে প্রতিফলিত করে। এই প্রতিবেদনটি ঐতিহাসিক তথ্যের ভিত্তিতে ২৯ জুলাইয়ের রাজনৈতিক, সামরিক এবং আন্তর্জাতিক ঘটনাবলির একটি বিস্তারিত বিবরণ প্রদান করে।

ঢাকায় রাজনৈতিক ঘটনাবলি

২৯ জুলাই ১৯৭১ তারিখে ঢাকায় পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের সামরিক প্রশাসক ও গভর্নর লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান এবং পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আজমের মধ্যে টিক্কা খানের সরকারি বাসভবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে মুক্তিবাহিনীর ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলার কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়। টিক্কা খান পাকিস্তানের আদর্শে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলের কর্মীদের নিয়ে “মুজাহিদ বাহিনী” গঠনের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন এবং “দেশদ্রোহী” মুক্তিবাহিনীকে দমনের জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।

প্রতিক্রিয়ায়, গোলাম আজম পাঠ্যপুস্তক থেকে “অবাঞ্ছিত” অংশ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের জন্য টিক্কা খানকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, “ভবিষ্যৎ বংশধরদের খাঁটি পাকিস্তানি করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে পাঠ্যপুস্তক থেকে অবাঞ্ছিত অংশ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আমি আপনাকে অভিনন্দন জানাই। জাতীয় আদর্শভিত্তিক নতুন সিলেবাস ভবিষ্যৎ নাগরিকদের খাঁটি মুসলিম হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়ক হবে।” এই আলোচনা পাকিস্তানি প্রশাসনের যুদ্ধের মধ্যে আদর্শগত নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার প্রচেষ্টাকে তুলে ধরে।

মুক্তিবাহিনীর গেরিলা অভিযান

২৯ জুলাই মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধ কার্যক্রম তীব্রতর হয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বেশ কয়েকটি সফল গেরিলা অভিযান পরিচালিত হয়। কুমিল্লায় মুক্তিবাহিনী একাধিক অতর্কিত হামলা চালায়।

জাফরগঞ্জে অ্যামবুশ: গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মুক্তিবাহিনী জাফরগঞ্জে নদীপথে যাত্রারত প্রায় ৩০০ পাকিস্তানি সৈন্য বহনকারী সাতটি নৌকার উপর অ্যামবুশ করে। মর্টার, লাইট মেশিনগান (এলএমজি) এবং সাবমেশিনগান (এসএমজি) ব্যবহার করে তারা চারটি নৌকা ধ্বংস করে, যাতে থাকা ১২৫ জন সৈন্যের বেশিরভাগই ডুবে, মর্টারের আঘাতে বা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। বাকি তিনটি নৌকা আর্টিলারি সহায়তায় পালিয়ে যায়।

মন্দভাগে হামলা: কুমিল্লার মন্দভাগে মুক্তিবাহিনী মেশিনগান এবং মর্টার ব্যবহার করে অতর্কিত হামলা চালায়, যাতে প্রায় ৩০ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়।

মুকুন্দপুর-হরশপুর রেলস্টেশন: কুমিল্লায় মুক্তিবাহিনীর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট হেলাল মুর্শেদের নেতৃত্বে এক কোম্পানি মুক্তিযোদ্ধা মুকুন্দপুর-হরশপুর রেলস্টেশন ঘাঁটিতে হামলা চালায়। এই হামলায় পাকিস্তানি বাহিনীর উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়, এবং মুক্তিবাহিনী তাদের ঘাঁটিতে ফিরে যায়।

দাউদকান্দির বাতাকান্দি: দাউদকান্দির বাতাকান্দিতে মুক্তিবাহিনীর গেরিলা হামলায় পাকিস্তানি বাহিনীর বেতার ব্যবস্থা এবং টেলিফোন সেবা অকার্যকর হয়ে পড়ে।

ঘাটুকিয়ায় লঞ্চে হামলা: কুমিল্লার ঘাটুকিয়ায় মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি বাহিনীর একটি লঞ্চে অতর্কিত হামলা চালায়। প্রায় ৪৫ মিনিটের তীব্র সংঘর্ষে পাকিস্তানি বাহিনীর ৫ জন সৈন্য নিহত এবং ১০ জন আহত হয়।

কুমিল্লায় পাকিস্তানি প্রশাসকদের পলায়ন: কুমিল্লায় মুক্তিবাহিনীর ক্রমাগত হামলার ভয়ে পাকিস্তানি প্রশাসনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা কুমিল্লা ছেড়ে চান্দিনায় আশ্রয় নেয়।

অন্যান্য অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর অভিযান

টাঙ্গাইল: মধুপুরে রাস্তার পাশে রাজাকার ও বিহারিদের বহু মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পাকিস্তানি বাহিনী এসব মরদেহ সংগ্রহ বা কবর দেওয়ার জন্য আসেনি।

ময়মনসিংহ: পারুলদিয়া বাজারে আফসার বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার চাঁন মিয়ার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি বাহিনীর চর ও রাজাকারদের উপর অ্যামবুশ করে, যাতে ৩ জন রাজাকার নিহত হয়।

সুনামগঞ্জ: মুক্তিযোদ্ধা ইপিআর আব্দুল হাই, জগৎজ্যোতি দাস এবং মুজাহিদ মিয়ার নেতৃত্বে তিনটি দল পাকিস্তানি বাহিনীর সাচনা ও জামালগঞ্জ ঘাঁটি আক্রমণ করে। ত্রিমুখী আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি বাহিনী দুর্লভপুরের দিকে পালিয়ে যায়। এই যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সিরাজ শহীদ হন।

সিলেট: মোহাম্মদপুরের তেলিয়াপাড়ায় মুক্তিবাহিনীর অতর্কিত হামলায় একজন পাকিস্তানি কর্মকর্তা, ২ জন জেসিও, ১ জন এনসিও সহ প্রায় ৪০ জন সৈন্য নিহত হয়।

হবিগঞ্জ: চুনারুঘাটে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় ৯ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়।

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা শহর, ভোমরা, দেবহাটা ও কালীগঞ্জ থেকে আগত পাকিস্তানি বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট রাত ৮টার দিকে ভোমরা প্রতিরোধ ঘাঁটিতে আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনী তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে, এবং আর্টিলারি ও মর্টার ব্যবহার করে অসংখ্য পাকিস্তানি সৈন্যকে হত্যা করে।

এছাড়া, কলকাতা থেকে প্রকাশিত হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মুক্তিফৌজ কমান্ডোরা উত্তরাঞ্চলে, বিশেষ করে রংপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়, “হিট অ্যান্ড রান” কৌশল তীব্রতর করেছে। ২৩ জুলাই তারা সেনানিবাসের তিনটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় এক ডজন পাকিস্তানি সৈন্য হত্যা করে এবং একটি গাড়ি ধ্বংস করে। একই দিন তারা আলমনগর উপশহরে হ্যান্ড গ্রেনেড দিয়ে আক্রমণ করে এক ডজনেরও বেশি পাকিস্তানি সমর্থককে হত্যা করে। পরদিন নীলফামারীতে পাকিস্তানি সমর্থকদের সঙ্গে কমান্ডারদের বৈঠকের উপর মুক্তিবাহিনী ঝটিকা আক্রমণ চালায়, অনেককে হত্যা করে।

কলকাতার যুগান্তর পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দিনাজপুর জেলার ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, বোদা, তেঁতুলিয়া এবং দেবীগঞ্জ মুক্তিবাহিনীর সম্পূর্ণ দখলে। এসব এলাকার সরকারি ও বেসরকারি ভবনে বাংলাদেশের পতাকা উড়ছে।

আন্তর্জাতিক ডাকটিকিট প্রকাশ

২৯ জুলাই মুজিবনগর, কলকাতার বাংলাদেশ মিশন এবং লন্ডন থেকে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ৮টি ডাকটিকিট প্রকাশ করে। এই ডাকটিকিটগুলির নকশা করেন ভারতীয় বাঙালি শিল্পী বিমান মল্লিক। এই ডাকটিকিট প্রকাশ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন ও স্বীকৃতির একটি প্রতীক ছিল।

ভারতে রাজনৈতিক ও সংবাদমাধ্যমের ঘটনা

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরদার শরণ সিং ২৯ জুলাই দিল্লিতে বলেন, “নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশ সমস্যা উত্থাপন করার কোনো ইচ্ছা বর্তমানে ভারতের নেই।” তিনি জানান, জাতিসংঘের মহাসচিব উ থান্ট বাংলাদেশ সংকট নিয়ে বিবেচনার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের কোনো আনুষ্ঠানিক বা ঘরোয়া বৈঠক আহ্বানের পরামর্শ দেননি।

পাকিস্তানে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র

২৯ জুলাই করাচির প্রেসিডেন্ট ভবনে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো আড়াই ঘণ্টার একটি বৈঠক করেন। আলোচনার বিষয়বস্তু প্রকাশ না হলেও ভুট্টো সাংবাদিকদের জানান, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে, তবে তিনি এখনই বিস্তারিত কিছু বলবেন না, কারণ এতে সমস্যা আরও জটিল হতে পারে।

ইসলামাবাদের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদে আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতা খর্ব করতে নতুন ষড়যন্ত্র করছেন। তিনি নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সদস্যদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ এনে তাদের সদস্যপদ বাতিল করে শূন্য আসনে উপনির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে।

পূর্ব পাকিস্তান সফর শেষে করাচি ফিরে তুর্কি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের নেতা কাসিম গুলেক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পাকিস্তান সরকার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে, এবং জাতীয় পরিষদের বহু সদস্যকে অযোগ্য ঘোষণা করে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

আন্তর্জাতিক মহলে ঘটনাবলি

জাতিসংঘের এক মুখপাত্র ২৯ জুলাই জানান, পূর্ব পাকিস্তান ও ভারতে পর্যবেক্ষক মোতায়েনের জন্য মহাসচিব উ থান্টের উদ্যোগ নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে এখনো মতৈক্য সৃষ্টি হয়নি। ভারত এই প্রস্তাবে অসম্মতি জানিয়েছে, তবে আনুষ্ঠানিকভাবে উ থান্টের প্রচেষ্টার বিরোধিতা বা প্রত্যাখ্যান করেনি। যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান এই বিষয়ে প্রকাশ্য আলোচনার পক্ষপাতী নয়, এবং সোভিয়েত ইউনিয়নও এভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণে রাজি নয়।

নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি ফ্রান্সের জাক কোসিউস্কো মরিসকে পাঠানো এক গোপন স্মারকপত্রে উ থান্ট বাংলাদেশের মানবিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গেরিলা লড়াই, দুর্ভিক্ষের সম্ভাবনা এবং ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আশঙ্কার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি আগামী মাসে শরণার্থীদের অবস্থা পর্যবেক্ষণে ভারত ও পাকিস্তান সফর করবেন। তিনি ভারতের ভিসা পেয়েছেন এবং পাকিস্তানের ভিসার জন্য আবেদন করেছেন। রিপাবলিকান সিনেটর চার্লস ম্যাসিকাসও এই সফরের কথা ভাবছেন।

পাকিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জোসেফ ফারল্যান্ড প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি ও শরণার্থী সংকট নিয়ে আলোচনা করেন।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রতিবেদন

মর্নিং স্টার (লন্ডন): এই পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় “ক্র্যাক প্লাটুন” নামে একটি গেরিলা দল চারটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটিতে হামলা চালিয়েছে। এছাড়া টিক্কা খানের বাসভবন এবং ঢাকার দুটি অভিজাত শপিং মলেও হামলা হয়েছে।

দ্য সানডে টাইমস: এই পত্রিকা জানায়, পূর্ব বাংলায় গণহত্যা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে, শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির দাবিতে এবং মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে ১ আগস্ট লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ারে জর্জ হ্যারিসনের “বাংলাদেশ” রেকর্ডটি শোনানো হবে। একই দিন নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে “কনসার্ট ফর বাংলাদেশ” অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে জর্জ হ্যারিসন, রিঙ্গো স্টার এবং বব ডিলান অংশ নেবেন। এই সমাবেশের আয়োজন করে “অ্যাকশন বাংলাদেশ”। লন্ডনে প্রবাসী বাঙালিরা এই দিনটি সংহতি দিবস হিসেবে পালন করবে।

নিউজ উইক: “The Bengalis Strike Back” শিরোনামে এক সম্পাদকীয়তে বলা হয়, মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধ অভিযান ক্রমেই জোরদার হচ্ছে, এবং পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী তাদের হাতে চরম মার খাচ্ছে। আরেক প্রতিবেদনে সাংবাদিক লোরেন জেনকিন্স জানান, মুক্তিবাহিনী দুই দিন আগে দুজন দালালকে গণধোলাই দেয়, যাদের পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী উদ্ধার করলেও তাদের শোচনীয় মৃত্যু হয়।

লন্ডন টাইমস: বিশেষ প্রতিনিধি মাইকেল হর্নসবি জানান, পূর্ব পাকিস্তানে গেরিলাদের অতর্কিত হামলায় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ঢাকায় গেরিলা হামলার প্রতিশোধে পাকিস্তানি বাহিনী নিরীহ মানুষের উপর নিপীড়ন চালাচ্ছে।

২৯ জুলাই ১৯৭১ ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একটি ঘটনাবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ দিন। মুক্তিবাহিনীর দুঃসাহসিক গেরিলা অভিযান, ঢাকায় পাকিস্তানি প্রশাসনের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে উত্তেজনা, এবং জর্জ হ্যারিসনের মতো বৈশ্বিক শিল্পীদের সমর্থন এই দিনের তাৎপর্যকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘটনাগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বহুমাত্রিক প্রকৃতি এবং দেশ-বিদেশের সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রতিফলন ঘটায়।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র তৃতীয়, সপ্তম, দশম, দ্বাদশ, ত্রয়োদশ, চতুর্দশ খণ্ড।

বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ: সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর দুই, তিন, পাঁচ, আট ও এগারো।

নিউজ উইক, ২৯ জুলাই ১৯৭১।

হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড, ২৯ জুলাই ১৯৭১।

দ্য সানডে টাইমস, ২৯ জুলাই ১৯১।

মর্নিং স্টার, ২৯ জুলাই ১৯৭১।

দৈনিক পাকিস্তান, ৩০ জুলাই ১৯৭১।

দৈনিক যুগান্তর, ২৯ জুলাই ১৯৭১।

ইত্তেফাক, ৩০ ও ৩১ জুলাই ১৯৭১।

আনন্দবাজার পত্রিকা, ভারত, ৩০ ও ৩১ জুলাই ১৯৭১।

অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৩১ জুলাই ১৯৭১: কামালপুর সীমান্ত ঘাঁটিতে তীব্র যুদ্ধ

পাথরাইল-নলশোদা গণহত্যা (দেলদুয়ার, টাঙ্গাইল)

৩০ জুলাই ১৯৭১: মুক্তিবাহিনীর সফল গেরিলা অভিযান

গঙ্গাচড়ার সহিংসতা / রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব ও সমাজের নীরবতা

২৯ জুলাই ১৯৭১: মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধ কার্যক্রম তীব্রতর

সংবিধানের সঙ

২৭ জুলাই ১৯৭১: বিভিন্ন অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর সাহসী আক্রমণ

২৬ জুলাই ১৯৭১: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন

রাধুটিলা গণহত্যা (বিয়ানীবাজার, সিলেট)

২৪ জুলাই ১৯৭১: ভেনিজুয়েলা ও সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের গণহত্যার প্রতিবাদ

১০

পাতারচর গণহত্যা (মুলাদী, বরিশাল)

১১

মানুষই মানুষের অন্তিম আশ্রয়

১২

২৩ জুলাই ১৯৭১: বিশ্ব শক্তি বাংলাদেশ সংকট নিয়ে সক্রিয়ভাবে জড়িত

১৩

২২ জুলাই ১৯৭১: টাঙ্গাইলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উপর আক্রমণ

১৪

ভাড়ায় চাপাতি ও মোটরসাইকেল: রাজধানীর অপরাধ জগতের ভয়াবহ নতুন রূপ

১৫

রাজনীতির উনমানুষরাই প্রলাপ ডাকে বেশি

১৬

২১ জুলাই ১৯৭১: ঠাকুরগাঁওয়ে গেরিলা অভিযান মুক্তিযোদ্ধাদের

১৭

মবতন্ত্রের জয়

১৮

ডিজিটাল দাসত্ব: মনোযোগ অর্থনীতি ও জ্ঞান পুঁজিবাদে তরুণ প্রজন্মের মননশীলতার অবক্ষয়

১৯

২০ জুলাই, ১৯৭১: বাংলাদেশে কুচক্রী আগ্রাসন

২০