বিকেলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একটি দল ইটনা বাজারে প্রবেশ করে। তাদের স্বাগত জানান স্থানীয় রাজাকার-প্রধান দেওয়ান আব্দুর রহিম। বাজারে ঢুকেই সেনারা বেপরোয়াভাবে লাঠিপেটা শুরু করে। এ সময় সাধু নামে একজনকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর তারা বাজারের পার্শ্ববর্তী ঋষিপাড়া, কামারপাড়া, কুমারপাড়া এবং মধ্যগ্রামে হামলা চালায়।
হিন্দু-মুসলমান, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অনেককে ধরে নিয়ে পাকিস্তানি সেনারা পূর্বপাড়া ওয়ারলেস কেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে প্রথমে তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। পরে শিকারদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করা হয়, যাতে অনেকে প্রাণ হারান। নিহতদের মৃতদেহ হাওরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। মারাত্মকভাবে আহত কেউ কেউ প্রাণে বেঁচে গেলেও তাদের সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়।
নিহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় জানা গেছে, তারা হলেন:
যোগেন্দ্র ঋষি (পিতা: শুধু ঋষি, মধ্যগ্রাম)
সুশিলা রানী দাস (স্বামী: গুরুচরণ রায়, মধ্যগ্রাম)
প্রহ্লাদ চন্দ্র পাল (পিতা: প্রকাশ চন্দ্র পাল, মধ্যগ্রাম)
যাদব চন্দ্র সাহা (পিতা: দীনেশ চন্দ্র সাহা, মধ্যগ্রাম)
রফু মিয়া (পিতা: রিয়াজ আলী, পূর্বগ্রাম)
বাবুল চন্দ্র সাহা (পিতা: যাদব চন্দ্র সাহা, মধ্যগ্রাম)
লক্ষ্মীকান্ত সাহা (পিতা: বিষ্ণুচরণ সাহা, মধ্যগ্রাম)
শয়ন লক্ষ্মী সাহা (স্বামী: দীনেশ চন্দ্র সাহা, মধ্যগ্রাম)
মনোরঞ্জন পাল (পিতা: কালাচান পাল, মধ্যগ্রাম)
মিছির আলী (উদিয়ারপাড়)
অক্ষয় কর্মকার (পিতা: গঙ্গাচরণ কর্মকার, মধ্যগ্রাম)
মন দয়াল কর্মকার (পিতা: নকুল কর্মকার, মধ্যগ্রাম)
ইন্দ্রজিৎ কর্মকার (পিতা: জগৎ কর্মকার, মধ্যগ্রাম)
কার্তিক পাল (পিতা: মণীন্দ্র পাল, মধ্যগ্রাম)
ধরণী পাল (পিতা: ললিত পাল, মধ্যগ্রাম)
সাধু (মধ্যগ্রাম)
ওয়াজ উদ্দিন (উদিয়ারপাড়)
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, ৬ষ্ঠ খণ্ড লেখক: মো. রওশন আলী রুশো
মন্তব্য করুন